ব্যবহারিক জ্যামিতি

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গণিত - | NCTB BOOK

পূর্বের শ্রেণিতে জ্যামিতির বিভিন্ন উপপাদ্য প্রমাণে ও অনুশীলনীতে চিত্র অঙ্কনের প্রয়োজন ছিল। সে সব চিত্র সূক্ষ্মভাবে অঙ্কন না করলে চলতো। কিন্তু কখনো কখনো জ্যামিতিক চিত্র সূক্ষ্মভাবে অঙ্কনের প্রয়োজন হয়। যেমন, একজন স্থপতি যখন কোনো বাড়ির নকশা করেন কিংবা প্রকৌশলী যখন যন্ত্রের বিভিন্ন অংশের চিত্র আঁকেন। এ ধরনের জ্যামিতিক অঙ্কনে শুধু স্কেল ও পেন্সিল কম্পাসের সাহায্য নেওয়া হয়। এর আগে আমরা স্কেল ও পেন্সিল কম্পাসের সাহায্যে ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজ আঁকতে শিখেছি। এ অধ্যায়ে বিশেষ ধরনের ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজ অঙ্কনের আলোচনা করা হবে।

এ অধ্যায় শেষে শিক্ষার্থীরা ---

  • চিত্রের সাহায্যে ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • প্রদত্ত উপাত্ত ব্যবহার করে ত্রিভুজ অঙ্কন করতে পারবে।
  • প্রদত্ত উপাত্ত ব্যবহার করে চতুর্ভুজ, সামান্তরিক, ট্রাপিজিয়াম অঙ্কন করতে পারবে।

 

ত্রিভুজ অঙ্কন

প্রত্যেক ত্রিভুজের তিনটি বাহু ও তিনটি কোণ রয়েছে। তবে কোনো ত্রিভুজের আকার ও আকৃতি নির্দিষ্ট করার জন্য সবগুলো বাহু ও কোণের প্রয়োজন হয় না। যেমন, ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি দুই সমকোণ বলে এর যেকোনো দুইটি কোণের মান দেওয়া থাকলে তৃতীয় কোণটির মান বের করা যায়। আবার, ত্রিভুজের সর্বসমতা সংক্রান্ত উপপাদ্যগুলো থেকে দেখা যায় যে, কোনো ত্রিভুজের তিনটি বাহু ও তিনটি কোণ অর্থাৎ ছয়টির মধ্যে কেবলমাত্র নিম্নলিখিত তিনটি অপর এক ত্রিভুজের অনুরূপ তিনটি অংশের সমান হলেই ত্রিভুজ দুইটি সর্বসম হয়। অর্থাৎ, এ তিনটি অংশ দ্বারা নির্দিষ্ট আকারের অনন্য ত্রিভুজ আঁকা যায়। সপ্তম শ্রেণিতে আমরা নিম্নবর্ণিত উপাত্ত থেকে ত্রিভুজ আঁকতে শিখেছি।

 

১. তিনটি বাহু

২. দুইটি বাহু ও এদের অন্তর্ভুক্ত কোণ

৩. দুইটি কোণ ও এদের সংলগ্ন বাহু

 

৪. দুইটি কোণ ও একটির বিপরীত বাহু

 

৫. দুইটি বাহু ও এদের একটির বিপরীত কোণ

 

৬. সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজ ও অপর একটি বাহু

 

লক্ষণীয় যে, উপরের প্রত্যেক ক্ষেত্রে ত্রিভুজের তিনটি অংশ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু যেকোনো তিনটি অংশ নির্দিষ্ট করলেই ত্রিভুজটি নির্দিষ্ট হয় না। যেমন, ত্রিভুজের তিনটি কোণ দেওয়া থাকলে বিভিন্ন আকারের অসংখ্য ত্রিভুজ আঁকা যায় (যাদের সদৃশ ত্রিভুজ বলা হয়)।

অনেক সময় ত্রিভুজ আঁকার জন্য এমন তিনটি উপাত্ত দেওয়া থাকে, যাদের সাহায্যে বিভিন্ন অঙ্কনের মাধ্যমে ত্রিভুজটি নির্ধারণ করা যায়। এরূপ কয়েকটি সম্পাদ্য নিচে বর্ণনা করা হলো।

 

সম্পাদ্য ১. ত্রিভুজের ভূমি, ভূমি সংলগ্ন একটি কোণ ও অপর দুই বাহুর সমষ্টি দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে।

মনে করি, কোনো ত্রিভুজের ভূমি a, ভূমি সংলগ্ন একটি কোণ ∠x এবং অপর দুই বাহুর সমষ্টি s দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন :

১. যেকোনো একটি রশ্মি BE থেকে ভূমি a এর সমান করে BC রেখাংশ কেটে নিই। BC রেখাংশের B বিন্দুতে ∠x এর সমান ∠CBF আঁকি।

২. BF রশ্মি থেকে s এর সমান BD অংশ কাটি।

৩. C, D যোগ করি। C বিন্দুতে DC রেখাংশের যে পাশে B বিন্দু আছে সেই পাশে ∠BDC এর সমান ∠DCG আঁকি।

৪. CG রশ্মি BD কে A বিন্দুতে ছেদ করে।

তাহলে, ∆ABC ই উদ্দিষ্ট ত্রিভুজ।

প্রমাণ : ∆ACD এ ∆ADC = ∆ACD [অঙ্কন অনুসারে]

 AC = AD

এখন, ∆ABC এ ∆ABC = ∠x, BC = a [অঙ্কন অনুসারে]

এবং BA + AC = BA+ AD = BD = s I

অতএব, ∆ABC ই নির্ণেয় ত্রিভুজ।

বিকল্প পদ্ধতি : মনে করি, কোনো ত্রিভুজের ভূমি a, ভূমি সংলগ্ন একটি কোণ Zx এবং অপর দুই বাহুর সমষ্টি s দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন :

১. যেকোনো একটি রশ্মি BE থেকে ভূমি a এর সমান করে BC রেখাংশ কেটে নিই। রেখাংশের B বিন্দুতে ∠x এর সমান ∠CBF আঁকি।

২. BF রশ্মি থেকে এর সমান BD অংশ কাটি।

৩. C, D যোগ করি। CD এর লম্বদ্বিখণ্ডক PQ আঁকি।

8. PQ রশ্মি BD রশ্মিকে A এবং CD কে R বিন্দুতে ছেদ করে। AC যোগ করি।

তাহলে, ∆ABC ই উদ্দিষ্ট ত্রিভুজ।

প্রমাণ : ∆ACR এবং ∆ADR এ CR = DR, AR = AR এবং অন্তর্ভুক্ত ∠ARC = অন্তর্ভুক্ত ∠ARD [সমকোণ]

∆ACR ≅ ∆ADR I

 AC = AD

এখন, ∆ABC এ ∠ABC = ∠x, BC = a [অঙ্কন অনুসারে]

এবং BA + AC = BA + AD = BD = s ।

অতএব, ∆ABC ই নির্ণেয় ত্রিভুজ।

 

সম্পাদ্য ২. ত্রিভুজের ভূমি, ভূমি সংলগ্ন একটি সূক্ষ্মকোণ ও অপর দুই বাহুর অন্তর দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে।

মনে করি, কোনো ত্রিভুজের ভূমি a, ভূমি সংলগ্ন সূক্ষ্মকোণ Z এবং অপর দুই বাহুর অন্তর d দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন :

১. যেকোনো একটি রশ্মি BF থেকে ভূমি এর সমান করে BC রেখাংশ কেটে নিই। BC রেখাংশের B বিন্দুতে ∠x এর সমান ∠CBE আঁকি।

২. BE রশ্মি থেকে d এর সমান BD অংশ কেটে নিই।

৩. C, D যোগ করি। DC রেখাংশের যে পাশে E বিন্দু আছে সেই পাশে C বিন্দুতে ∠EDC এর সমান ∠DCA আঁকি।

CA রশ্মি BE রশ্মিকে A বিন্দুতে ছেদ করে। তাহলে, ∆ABC ই উদ্দিষ্ট ত্রিভুজ।

প্রমাণ : অঙ্কন অনুসারে, ∆ACD এ ∠ACD = ∠ADC

 AD = AC

সুতরাং দুই বাহুর অন্তর, AB – AC = AB – AD = BD = d

এখন, ∆ABC এ BC = a, AB – AC = d এবং ∠ABC = ∠a

সুতরাং, ∆ABC ই নির্ণেয় ত্রিভুজ।

কাজ :

ক) প্রদত্ত কোণ সূক্ষ্মকোণ না হলে, উপরের পদ্ধতিতে অঙ্কন করা সম্ভব নয়। কেন? এ ক্ষেত্রে ত্রিভুজটি আঁকার কোনো উপায় বের কর।

খ) ত্রিভুজের ভূমি, ভূমি সংলগ্ন একটি সূক্ষ্মকোণ ও অপর দুই বাহুর অন্তর দেওয়া আছে। বিকল্প পদ্ধতিতে ত্রিভুজটি অঙ্কন কর।

 

সম্পাদ্য ৩. ত্রিভুজের ভূমি সংলগ্ন দুইটি কোণ ও পরিসীমা দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে। 

মনে করি, একটি ত্রিভুজের পরিসীমা p এবং ভূমি সংলগ্ন দুইটি কোণ ∠x ও y দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন : 

১. যেকোনো একটি রশ্মি DF থেকে পরিসীমা p এর সমান করে DE অংশ কেটে নিই। D ও E বিন্দুতে DE রেখাংশের একই পাশে ∠x এর সমান ∠EDL এবং ∠y এর সমান ∠DEM আঁকি।

২. কোণ দুইটির দ্বিখণ্ডক DG ও EH আঁকি।

৩. মনে করি, DG ও EH রশ্মিদ্বয় পরস্পরকে A বিন্দুতে ছেদ করে। A বিন্দুতে ∠ADE এর সমান ∠DAB এবং ∠AED এর সমান ∠EAC আঁকি।

8. AB এবং AC রশ্মিদ্বয় DE রেখাংশকে যথাক্রমে B ও C বিন্দুতে ছেদ করে।

তাহলে, ∆ABC ই উদ্দিষ্ট ত্রিভুজ। 

প্রমাণ : ∆ABD এ ∠ADB = ∠DAB [অঙ্কন অনুসারে]

 AB = DB

আবার, ∆ACE এ ∠AEC = ∠EAC

 CA = CE

সুতরাং ∆ABC এ AB + BC + CA = DB + BC + CE = DE = p

ABC=ADB+DAB=12x+12x=x

এবং ACB=AEC+EAC=12y=y

সুতরাং ∆ABC ই নির্ণেয় ত্রিভুজ।

কাজ :

ত্রিভুজের ভূমি সংলগ্ন দুইটি সূক্ষ্মকোণ ও পরিসীমা দেওয়া আছে। বিকল্প পদ্ধতিতে ত্রিভুজটি অঙ্কন কর।

 

উদাহরণ ১. একটি ত্রিভুজ ABC আঁক, যার ∠B = 60°, ZC = 45° এবং পরিসীমা AB + BC + CA = 11 সে.মি. ।

অঙ্কন : নিচের ধাপসমূহ অনুসরণ করি :

১. রেখাংশ PQ = 11 সে.মি. আঁকি।

২. PQ রেখাংশের একই পাশে P এবং Q বিন্দুতে যথাক্রমে ∠QPL = 60° ও ∠PQM = 45° কোণ আঁকি।

৩. কোণ দুইটির দ্বিখণ্ডক PG ও QH আঁকি। মনে করি, PG ও QH রশ্মিদ্বয় পরস্পরকে A বিন্দুতে ছেদ করে।

8. PA, QA রেখাংশের লম্ব সমদ্বিখণ্ডক আঁকি যা PQ রেখাংশকে যথাক্রমে B ও C বিন্দুতে ছেদ করে।

৫. A, B এবং A, C যোগ করি।

তাহলে, ∆ABC ই উদ্দিষ্ট ত্রিভুজ।

কাজ : 

সমকোণী ত্রিভুজের সমকোণ সংলগ্ন একটি বাহু এবং অতিভুজ ও অপর বাহুর অন্তর দেওয়া আছে। ত্রিভুজটি আঁক।

 

উদাহরণ ২. একটি ত্রিভুজের ভূমি a = 3 সে.মি., ভূমি সংলগ্ন সূক্ষ্মকোণ 45° এবং অপর বাহু দুইটির সমষ্টি = 6 সে.মি.।

ক) উদ্দীপকের তথ্যগুলো চিত্রে প্রকাশ কর।

খ) ত্রিভুজটি অঙ্কন কর। (অঙ্কনের চিহ্ন ও বিবরণ আবশ্যক)

গ) একটি বর্গের পরিসীমা 28 হলে বর্গটি আঁক। (অঙ্কনের চিহ্ন ও বিবরণ আবশ্যক)

সমাধান:

ক)

খ) 

AX যেকোনো রশ্মি থেকে AB = a কাটি। A বিন্দুতে ∠XAE = আঁকি, AE থেকে AD = s নেই। B, D যোগ করি। এবার B বিন্দুতে ∠ADB এর সমান করে ∠DBC আঁকি। BC রেখাংশ AD কে C বিন্দুতে ছেদ করে।  ABC উদ্দিষ্ট ত্রিভুজ।

 

গ) মনে করি, একটি বর্গের পরিসীমা p = 2s দেওয়া আছে, বর্গটি অঙ্কন করতে হবে।

AX যেকোনো রশ্মি থেকে AB=14p কেটে নেই। A বিন্দুতে AE ⊥ AB আঁকি। AE থেকে AD = AB কাটি।

এবার B ও D বিন্দুকে কেন্দ্র করে 14p এর সমান C ব্যাসার্ধ নিয়ে ∠BAD এর অভ্যন্তরে দুইটি বৃত্তচাপ আঁকি। বৃত্তচাপদ্বয় পরস্পর C বিন্দুতে ছেদ করে। B, C এবং C, D যোগ করি। 

 ABCD উদ্দিষ্ট বর্গক্ষেত্র।

 

 

চতুৰ্ভুজ অঙ্কন

আমরা দেখেছি যে, ত্রিভুজের তিনটি উপাত্ত দেওয়া থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই ত্রিভুজটি নির্দিষ্টভাবে আঁকা সম্ভব। কিন্তু চতুর্ভুজের চারটি বাহু দেওয়া থাকলেই একটি নির্দিষ্ট চতুর্ভুজ আঁকা যায় না। নির্দিষ্ট চতুৰ্ভুজ আঁকার জন্য পাঁচটি স্বতন্ত্র উপাত্ত প্রয়োজন হয়। নিম্নে বর্ণিত পাঁচটি উপাত্ত জানা থাকলে, নির্দিষ্ট চতুর্ভুজ আঁকা যায়।

   ১. চারটি বাহু ও একটি কোণ

   ২. চারটি বাহু ও একটি কর্ণ

   ৩. তিনটি বাহু ও দুইটি কর্ণ

   ৪. তিনটি বাহু ও এদের অন্তর্ভুক্ত দুইটি কোণ

   ৫. দুইটি বাহু ও তিনটি কোণ।

অষ্টম শ্রেণিতে উল্লেখিত উপাত্ত দিয়ে চতুর্ভুজ অঙ্কন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অঙ্কনের কৌশল লক্ষ করে দেখা যায় কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি চতুর্ভুজ আঁকা হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে ত্রিভুজ অঙ্কনের মাধ্যমে চতুর্ভুজ আঁকা হয়। যেহেতু কর্ণ চতুর্ভুজকে দুইটি ত্রিভুজে বিভক্ত করে, সেহেতু উপাত্ত হিসাবে একটি বা দুইটি কর্ণ প্রদত্ত হলে ত্রিভুজ অঙ্কনের মাধ্যমে চতুর্ভুজ আঁকা সম্ভব হয়।

১. চারটি বাহু ও একটি কোণ

২. চারটি বাহু ও একটি কর্ণ

৩. তিনটি বাহু ও দুইটি কর্ণ

৪. তিনটি বাহু ও এদের অন্তর্ভুক্ত দুইটি কোণ

৫. দুইটি বাহু ও তিনটি কোণ।

বিশেষ ধরনের চতুর্ভুজ অঙ্কনের জন্য অনেক সময় এমন উপাত্ত দেওয়া থাকে যা থেকে নির্দিষ্ট চতুৰ্ভুজ আঁকার জন্য প্রয়োজনীয় পাঁচটি স্বতন্ত্র উপাত্ত পাওয়া যায়। তাহলে ঐ উপাত্তের সাহায্যেও চতুর্ভুজটি আঁকা যায়। যেমন, সামান্তরিকের দুইটি সংলগ্ন বাহু ও এদের অন্তর্ভুক্ত কোণটি দেওয়া থাকলে সামান্তরিকটি আঁকা যায়। এখানে তিনটি মাত্র উপাত্ত দেওয়া আছে। আবার বর্গের মাত্র একটি বাহু দেওয়া থাকলেই বর্গটি আঁকা যায়। কারণ, তাতে পাঁচটি উপাত্ত, যথা: বর্গের চার সমান বাহু ও এক কোণ (সমকোণ নির্দিষ্ট হয়।

 

সম্পাদ্য ৪. সামান্তরিকের দুইটি কর্ণ ও এদের অন্তর্ভুক্ত একটি কোণ দেওয়া আছে। সামান্তরিকটি আঁকতে হবে।

মনে করি, সামান্তরিকের কর্ণ দুইটি a ও b এবং কর্ণদ্বয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি কোণ ∠x দেওয়া আছে। সামান্তরিকটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন: যেকোনো রশ্মি AE থেকে a এর সমান AC রেখাংশ নিই। AC এর মধ্যবিন্দু নির্ণয় করি। O বিন্দুতে ∠x এর সমান ∠AOP আঁকি। OP এর বিপরীত রশ্মি OQ অঙ্কন করি। OP ও OQ রশ্মিদ্বয় থেকে 12b এর সমান যথাক্রমে OB ও OD রেখাংশদ্বয় নিই। A, B; A, D; C, B ও

C, D যোগ করি।

তাহলে, ABCD ই উদ্দিষ্ট সামান্তরিক।

প্রমাণ : ∆AOB ও ∆COD এ OA=OC=12a, OB=OD=12b [অঙ্কনানুসারে]

এবং অন্তর্ভুক্ত ∠AOB অন্তর্ভুক্ত ∠COD [বিপ্রতীপ কোণ]

অতএব, ∆AOB ≅ ∆COD

সুতরাং, AB = CD এবং ∠ABO = ∠CDO; কিন্তু কোণ দুইটি একান্তর কোণ।

 AB ও CD সমান ও সমান্তরাল।

অনুরূপভাবে, AD ও BC সমান ও সমান্তরাল।

সুতরাং, ABCD একটি সামান্তরিক যার কর্ণদ্বয় AC=AO+OC=12a+12a=a ও BD = BO + OD =12b+12b=b এবং কর্ণ দুইটির অন্তর্ভুক্ত ∠AOB = ∠x

অতএব, ABCD ই নির্ণেয় সামান্তরিক।

 

সম্পাদ্য ৫. সামান্তরিকের দুইটি কর্ণ ও একটি বাহু দেওয়া আছে। সামান্তরিকটি আঁকতে হবে।

মনে করি সামান্তরিকের দুইটি কর্ণ a ও b এবং একটি বাহু c দেওয়া আছে। সামান্তরিকটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন: a ও b কর্ণদ্বয়কে সমান দুইভাগে বিভক্ত করি। যেকোনো রশ্মি AX থেকে c এর সমান AB নিই। A ও B কে কেন্দ্র করে যথাক্রমে a2 ও b2 এর সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে AB এর একই পাশে দুইটি বৃত্তচাপ আঁকি। মনে করি, বৃত্তচাপ দুইটি পরস্পরকে O বিন্দুতে ছেদ করে। A, O ও B, O যোগ করি। AO কে AE বরাবর এবং BO কে BF বরাবর বর্ধিত করি। OE থেকে a2=OC এবং OF থেকে b2=OD নিই। A, D, D, C ও B, C যোগ করি।

তাহলে, ABCD ই উদ্দিষ্ট সামান্তরিক।

প্রমাণ: ∆AOB ও ∆COD এ

OA=OC=a2; OB=OD=b2 [অঙ্কনানুসারে]

এবং অন্তর্ভুক্ত ∠AOB = অন্তর্ভুক্ত ∠COD [বিপ্রতীপ কোণ]

∆AOB ≅ ∆COD I

 AB = CD এবং ∠ABO = ∠ODC; কিন্তু কোণ দুইটি একান্তর কোণ।

AB ও CD সমান ও সমান্তরাল।

অনুরূপভাবে, AD ও BC সমান ও সমান্তরাল।

অতএব, ABCD ই নির্ণেয় সামান্তরিক।

 

উদাহরণ ৩. ট্রাপিজিয়ামের দুইটি সমান্তরাল বাহু এবং এদের মধ্যে বৃহত্তর বাহু সংলগ্ন দুইটি কোণ দেওয়া আছে। ট্রাপিজিয়ামটি আঁক।

মনে করি, ট্রাপিজিয়ামের সমান্তরাল বাহুদ্বয় a এবং b, যেখানে a > b এবং বৃহত্তর বাহু a সংলগ্ন কোণদ্বয় ∠x ও ∠y। ট্রাপিজিয়ামটি আঁকতে হবে।

অঙ্কন: যেকোনো রশ্মি AX থেকে AB = a নিই। AB রেখাংশের A বিন্দুতে ∠x এর সমান ∠BAY এবং B বিন্দুতে ∠y এর সমান ∠ABZ আঁকি।

এবার AB রেখাংশ থেকে AE = b কেটে নিই। E বিন্দুতে EC || AY আঁকি যা BZ রশ্মিতে C বিন্দুতে ছেদ করে। এবার CD || BA আঁকি। CD রেখাংশ AY রশ্মিকে D বিন্দুতে ছেদ করে। তাহলে, ABCD ই উদ্দিষ্ট ট্রাপিজিয়াম।

প্রমাণ : অঙ্কনানুসারে, AE || CD এবং AD || EC সুতরাং AECD একটি সামান্তরিক এবং CD = AE = b ।

এখন, চতুর্ভুজ ABCD এ AB = a, CD = b, AB || CD এবং ∠BAD = ∠x, ∠ABC - ∠y [অঙ্কন অনুসারে]

অতএব, ABCD ই নির্ণেয় ট্রাপিজিয়াম।

কাজ : রম্বসের পরিসীমা ও একটি কোণ দেওয়া আছে। রম্বসটি আঁক।

 

উদাহরণ ৪. ABC ত্রিভুজের ∠B = 60°, ∠C = 45° এবং পরিসীমা 13 সে.মি.।

ক) স্কেল ও কম্পাস দিয়ে ∠B ও ∠C আঁক।

খ) ত্রিভুজটি অঙ্কন কর। (অঙ্কনের চিহ্ন ও বিবরণ আবশ্যক)

গ) একটি রম্বস আঁক যার বাহুর দৈর্ঘ্য p3 এর সমান এবং একটি কোণ ZB এর সমান। (অঙ্কনের চিহ্ন ও বিবরণ আবশ্যক)

সমাধান :

ক)

খ)

যেকোনো রশ্মি RX থেকেRQ = p কেটে নেই। R বিন্দুতে 12B এবং Q বিন্দুতে 12C এর সমান করে যথাক্রমে ∠ERX ও ∠FQR আঁকি। ER ও FQ A বিন্দুতে ছেদ করে। এবার A বিন্দুতে ER এর যে পাশে ∠ERX অবস্থিত সে ই পাশে 12B এবং FQ এর যে পাশে ∠FQR অবস্থিত সে ই পাশে QAC=12C আঁকি। AB ও AC রেখাংশ, RQ কে যথাক্রমে B C বিন্দুতে ছেদ করে।

গ) রম্বসের বাহুর দৈর্ঘ্য 13p, একটি কোণ ∠B = 60° দেওয়া আছে। রম্বসটি আঁকতে হবে।

BX যেকোনো রশ্মি থেকে BA = 13p কয়টি। B বিন্দুতে ∠ABE 60° আঁকি। BE থেকে BC = AB নেই। আবার A ও C বিন্দুকে কেন্দ্ৰ করে 13p এর সমান ব্যাসার্ধ নিয়ে ∠ABC এর অভ্যন্তরে দুইটি বৃত্তচাপ আঁকি। বৃত্তচাপদ্বয় পরস্পর D বিন্দুতে ছেদ করে। A, D, C, D যোগ করি।

 ABCD উদ্দিষ্ট রম্বস।

Content added || updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Promotion